বাড়িঅপরাধ ও দুর্নীতিভন্ডামীর চরম সীমানায় ইরান চলছে হালাল সেক্স নামে রমরমা বানিজ্য

ভন্ডামীর চরম সীমানায় ইরান চলছে হালাল সেক্স নামে রমরমা বানিজ্য

সময় সংবাদ বিডি-

ঢাকাঃ ইরান মূলত শিয়া সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি দেশ। শিয়াদের রক্ষণশীল সমাজের আইনকানুন বেশ কড়া। বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কের ব্যাপারে কঠোর আইন আছে। অথচ, একই সাথে এই রক্ষণশীল সমাজ পতিতাদেরও জন্ম দিয়েছে।

যে পতিতারা অর্থের বিনিময়ে প্রলুব্ধ করবে শিয়া পুরুষদের। কিন্তু, আইন তো আছে ,বিয়ে ছাড়া বাকি সব সম্পর্কই অবৈধ। তাহলে কি করা যাবে? পতিতার সাথে ‘সেক্স’ করতে বিয়েই করে ফেলতে হবে। সেটা কয়েকমিনিটের জন্যই হোক, সমস্যা নেই। বিয়ে হয়েছে মানে হালাল যৌন সম্পর্কটি হালাল হয়েছে।

এই হচ্ছে তাদের চিন্তাধারা।

সম্প্রতি -স্যোসাল মিডিয়ার কারণে ইরানে এই হালাল সেক্স ধারণাটি বেশি ছড়িয়ে পড়ছে। অনেক তরুণ,বুড়ো,ডিভোর্সে নেয়া পুরুষ কিংবা মুসলিম ট্যুরিস্ট সহ অনেকের কাছেই এই হালাল সেক্স আইডিয়া জনপ্রিয় হয়ে উঠে। এমনিতেই সারা বিশ্বে মুসলিম ট্যুরিস্ট যারা আছে তাদেরকে টানার জন্য বিভিন্ন দেশ হালাল ট্যুরিজম ব্র‍্যান্ডিং করছে। সেখানে এন্টারটেইনমেন্টকে এমন ভাবে দেখানোর চেষ্টা থাকে যে প্রচার করা হয় এইসব বিনোদন কোনো ভাবেই ধর্মের সাথে সাংঘর্ষিক না।

হালাল সেক্স কিংবা পতিতার সাথে যৌন সম্পর্কের জন্য বিয়ে করতে হবে এই রীতিটিও তেমনই ঘরানার চিন্তা। যৌনতা এবং বিয়ে দুইটা ব্যাপারকে মিশানো কতটা উচিত? পতিতার সাথে অর্থের বিনিময়ে যে সম্পর্ক হচ্ছে সেটা যদি পাপ মনে করেন কেউ, তাহলে বিয়ের নাটকীয়তা করলেই কি সেই পাপ কেটে যাবে? এই রীতিটি সম্পর্কে জানার পর বেশ ভাবাচ্ছে বিষয়গুলো।

ব্যক্তি গতভাবে এই সংস্কৃতিটি একই সাথে ভন্ডামি এবং নিম্নস্তরের মনে হয়েছে। এই অদ্ভুত রীতির কথা দেখেশুনে মনে হচ্ছে, বিয়ে এমন একটি অজুহাত যা থাকলে ধর্ষণও বোধহয় হালাল হয়ে যাবে।

ধর্মকেও মাঝে মধ্যে যে ব্যবসায়িক পণ্য বানানো হয় তার জ্বলন্ত উদাহরণ বোধহয় ইরানের এই অদ্ভুত সংস্কৃতিটি। যদিও আরো অনেক দেশেই কন্ট্রাকচুয়াল বিয়ের বিষয়টি প্রচলিত তবে ইরানে চুক্তির বিয়েটাকে ব্যবহার করা হচ্ছে পতিতাবৃত্তির কাজে, যেহেতু পতিতার কাছে যাওয়াটা ধর্ম সমর্থন করে না, কারণ, পতিতা পরনারী, বিয়ে ছাড়া সম্পর্ক করলে সেটা অবৈধ বলে বিবেচিত হবে, সেহেতু বিয়ে নামক একটি পর্দার আড়ালে এই ধরণের যৌনতাকে হালাল বলে প্রচারণা করা হচ্ছে।

ইরানে শরীয়াহ আইন মোতাবেক মূলত দুই ধরণের বিয়ে প্রচলিত আছে। একটি স্থায়ী বিয়ে না স্বাভাবিক যে বিয়ে হয় সেটি। অপরটি হলো, অস্থায়ী বিয়ে যাকে বলা হয় মুতা’হ বিয়ে।

মুতা’হ এক ধরণের সাময়িক বা অস্থায়ী বিবাহ। একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য মোহর/অর্থের বিনিময়ে কোনো স্ত্রী লোকের সাথে এই বিয়ে হয়ে থাকে। নির্দিষ্ট সময় সীমা অতিক্রম হওয়ার সাথে সাথে আপনা আপনি এ বিবাহ ভঙ্গ হয়ে যায়। এর জন্য তালাকের দরকার হয় না। এ বিবাহ প্রথাটি আরবে ইসলামপূর্ব যুগে ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল, তবে নবিজী (সাঃ) এই বিবাহ কিয়ামত পর্যন্ত নিষিদ্ধ করেন।

এখন এই সময়ে এসে ইরানে সেই মুতা’হ বিয়ে হচ্ছে পতিতার সাথে সঙ্গমকে হালাল করার জন্য!

বিষয়-টি খুবই লজ্জা জনক।

সময়ের সাথে সাথে ইরানে পতিতাবৃত্তিকে অনেকেই বেঁচে থাকার অবলম্বন হিসেবে নিচ্ছে। দ্যা সানে প্রকাশিত একটি লেখায় বলা হয়েছে, পতিতারা বিয়ের ফর্মালিটির জটিলতাকে একটু সহজ করেছে খদ্দেরের জন্য। পুরুষরা পতিতার সাথে সম্পর্কের আগে অস্থায়ী বিয়ের খরচ চুকিয়ে দেয়, তারা যে কয়জনের সাথে শারিরীক সম্পর্কে আগ্রহী সেই কজন মানুষের জন্য।

(ইরানে সর্বোচ্চ চারটি বিয়ে করা যায় বৈধভাবে)

এ জন্যে কেউ চাইলে একসাথে চারজন পতিতাকে বিয়ে করতে পারে বা বিয়ের খরচ দিতে পারে।এভাবে যৌন সম্পর্ক করা লোকেদের বোধহয় একটা সাইকোলজিক্যাল চিন্তা থাকে এমন যে, সে যা করছে সেটা অবৈধ না, যেহেতু সে বিয়ে করেছে না বিয়ের খরচ দিয়ে কাজটা করছে তাহলে এটা খারাপ কিছু না, প্রতারণা না। কিন্তু আসলেই কি তাই?

এসব বিয়ের বয়স কয়েক মিনিট থেকে একমাস পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে, নির্ভর করে যার যার ইচ্ছের উপর। তবে বেশিরভাগ ‘হালাল সেক্স ম্যারেজ’ এক ঘন্টাই স্থায়ী হয়। তারপর যে যার মতো আবার খুঁজতে থাকে নতুন কোনো এক্সাইটমেন্ট!

আসলে সব মানুষই গোপন পাপ করার অভিলাষ পুষে রাখে। কিন্তু বিভিন্ন সাইকোলজিক্যাল বাধা পেরিয়ে অনেকেই নিজেকে অবরুদ্ধ করে রাখে। কিন্তু, যখন সাইকোলজিক্যাল বাধাটা থাকে না, অপরাধকে বা পাপকে আর পাপ মনে হয় না, তখন মানুষ ঠিকই গোপন পাপ করার জন্য যা ইচ্ছা তা-ই করতে পারে। মানুষের এসব সাইকোলজিক্যাল ট্যাবুকে ব্যবহার করেই কত রকম বাণিজ্য চলছে জগতে! “হালাল সেক্স ম্যারেজ”-ও তেমন একটি উদাহরণ।

সংগ্রহে-জসিম ভু্ঁইয়া

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Must Read

spot_img