বাড়িজাতীয়নাব্যতা সঙ্কটে শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি নৌ-রুট

নাব্যতা সঙ্কটে শিমুলিয়া-কাওড়াকান্দি নৌ-রুট

ohajong-nabbata-(7)

রুবেল ইসলাম, সময় সংবাদ বিডি-

মুন্সীগঞ্জঃ শুস্ক মৌসুমে পদ্মায় অব্যাহতভাবে পানি হ্রাসের কারণে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ২১ জেলার অন্যতম প্রবেশদ্বার শিমুলিয়া কাওড়াকান্দি নৌরুটে ভয়াবহ নাব্যতা সঙ্কট দেখা দিয়েছে। এতে করে ১৭কিলোমিটার দূরত্ববিশিষ্ট এ নৌরুটের ফেরী চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়লেও বর্তমানে ধারণক্ষমতার কম লোড ও আগের চেয়ে অতিরিক্ত সময় নিয়ে চলছে এ রুটের ফেরীগুলো।

পানি হ্রাস অব্যাহত থাকলে এর বিপরীতে সময় উপযোগী ড্রেজিং কাজ না হলে যে কোন মুহুর্তে যাত্রী ও যানবাহন পারপারে অচলাবস্থা সৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। এদিকে নৌরুটে পানি হ্রাসের কারণে গত শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় শিমুলিয়া থেকে কাওড়াকান্দিগামী রো রো ফেরী কেরামত আলী ১৩টি ট্রাক ও ৯টি ছোট গাড়ী নিয়ে নৌরুটের বাংলাবাজার পয়েন্টের মূল চ্যানেলে ১ঘন্টা আটকে ছিল। পরে সকাল সাড়ে ১০টায় ফেরীটি নিজে নিজে এ পয়েন্ট থেকে বের হয়ে আসতে সক্ষম হয়।

একই কারণে সকাল সাড়ে ১১টায় রো রো ফেরী বীরশ্রেষ্ঠ রুহুল আমীন কাওড়াকান্দি ৩ নং রো রো ঘাট থেকে যানবাহন লোড নিয়ে পন্টুনের ওপরের পকেট থেকে নৌরুটে বের হয়ে আসতে পারছিল না। একপর্যায়ে ফেরীটি ফের এ ঘাটে একটি ট্রাক কমিয়ে নৌরুটে বের হয়ে আসে।

মাওয়া বিআইডব্লিউটিসির একাধিক সূত্র জানায়, চলতি শুস্ক মৌসুমে পদ্মায় অব্যাহতভাবে পানি হ্রাস পাচ্ছে। এর ফলে শিমুলিয়া কাওড়াকান্দি নৌরুটের লৌহজং টার্নিংয়ের বাহিরে মুখে, শিমুলিয়া ফেরীঘাটের বাহিরে মাঝের চর পয়েন্টগুলোতে দেখো দিয়েছে নাব্যতা সঙ্কট। এছাড়া কাঁঠালবাড়ী, বাংলাবাজার, চেয়ারম্যানবাড়ী সংলগ্ন ও চরজানাজাত ৩ নং রো রো পন্টুনের নীচের পকেটের পয়েন্টগুলোতেও পানির গভীরতা কম থাকায় দেখো দিয়েছে নাব্যতা সঙ্কট।

এর মধ্যে হাজরা টার্নিংয়ের বাহির থেকে কাওড়াকান্দি (চরজানাজাত) ঘাট পর্যন্ত পানির গভীরতা কম থাকায় ফেরী চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে সবচেয়ে বেশী। বর্তমানে পদ্মায় প্রায় প্রতিদিনই গড়ে ৩/৪ সেন্টিমিটার করে পানি হ্রাস পাওয়ায় এরই মধ্যে এ চ্যানেলের বাংলাবাজার পয়েন্টে গতকাল ৬ফুট পানি বিরাজ করছিল বলে বিআইডব্লি¬উটিসির কর্মকর্তারা জানান।

এদিকে বালু ঘেঁষে ঘেঁষে ফেরীগুলো চলাচল করায় ফেরীর প্রপেলশনে ক্ষতির সম্মুখীন হয়ে পড়ছে। অন্যদিকে কম পানির স্থানে রো রো ফেরীগুলো পূর্ণ লোড নিয়ে ঘন্টায় ৫ থেকে সাড়ে ৬ নটিক্যাল মাইল গতির বিপরীতে সাড়ে ৩ থেকে সর্বোচ্চ সাড়ে ৪ নটিক্যাল মাইল গতিবেগে চলতে হচ্ছে। আর এতে করে রো রো ফেরীগুলো রাউন্ড ট্রিপে আগের তুলনায় অতিরিক্ত ১ঘন্টা সময় বেশী লাগছে বলে জানা গেছে।

এর আগে নৌরুটে স্বাভাবিক নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে গত আগষ্ট মাস থেকে বিআইডব্লিউটিএর ‘‘ড্রেজার-১৩৬,১৩৯,২০১৪-০২ ও ডেল্টা-২সহ ৪টি ড্রেজার এবং বঙ্গ ড্রেজার লিমিটেড থেকে ভাড়ায় আনা ৩টি বেসরকারী ড্রেজার মধুমতি ,আইসল্যান্ডার ও পদ্মাসহ মোট ৭টি ড্রেজার ”দিয়ে পদ্মায় পলি অপসারণ কাজ শুরু করে। তবে আগষ্ট মাসে মাওয়া পয়েন্টের পদ্মায় ওয়াটার লেভেল ১৮ফুটে প্রবাহিত হলেও বর্তমানে সাড়ে ১৩ফুট পানি হ্রাস পেয়ে সাড়ে ৪ফুটে প্রবাহিত হচ্ছে পানির লেভেল। একধিক সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে লৌহজং টার্নিংয়ের বাহিরে মুখে ,শিমুলিয়া ফেরীঘাটের বাহিরে মাঝের চরে ,কাঁঠালবাড়ী ,বাংলাবাজার ,চেয়ারম্যানবাড়ী সংলগ্ন , চরজানাজাত ১নং,২ নং ও ৩ নং রো রো পন্টুনের ওপরের পকেটের পয়েন্টগুলোতে পানির গভীরতা কম পাওয়া যাচ্ছে।

বিআইডব্লি¬উটিসির মেরিন অফিসার মো:শাজাহান জানান,পানি হ্রাস পেয়ে বর্তমানে পদ্মায় লোয়েষ্ট লো ওয়াটার লেভেল (এলএলডব্লিউ) চলছে। যার কারণে ঘাট ও চ্যানেলের একাধিক পয়েন্টে ফেরী চলাচলে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। তাই ফেরীগুলো কম যানবাহন নিয়ে চলতে বাধ্য হচ্ছে। এ ব্যাপারে ড্রেজিংয়ের জন্য বিআইডব্লিউটিএ কর্তৃপক্ষকে মৌখিক ও লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।

এ ব্যাপারে বিআইডব্লি¬উটিএর উপসহকারী প্রকৌশলী (ড্রেজিং) ইকবাল হোসেন জানান, কাঁঠালবাড়ী পয়েন্টে বিআইডব্লি¬উটিএর ডেল্টা-১ ড্রেজার দিয়ে এখনো পলি অপসারণ কাজ চলছে।এছাড়া নৌরুটে পলি অপসারণ (কাটিং) এখন শেষের পথে রয়েছে।তবে গত দুইদিন থেকে পদ্মায় সর্বনিম্ন পর্যায়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে বলে তিনি আরো জানান।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Must Read

spot_img