স্টাফ রিপোর্টার, সময় সংবাদ বিডি-
ঢাকাঃ সৌরজগতের সব গ্রহ-উপগ্রহের মাঝে গবেষকদের সবচাইতে আগ্রহের স্থান হলো ইউরোপা। মানুষ পা দিয়েছে চাঁদে, পরিকল্পনা চলছে মঙ্গলকে নিয়ে। কিন্তু বিজ্ঞানীদের গন্তব্য আসলে বৃহস্পতির বরফে ঢাকা চাঁদ ইউরোপা।
অনেকদিন ধরে রহস্যময় এই উপগ্রহে মহাকাশযান পাঠানোর চেষ্টা করা হচ্ছে কিন্তু প্রচন্ড খরচের ব্যাপার হওয়ায় তা আর বাস্তবায়িত হয়নি। কিন্তু এখন তা হবার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
গবেষকেরা কেন ইউরোপার ব্যাপারে এতো আগ্রহী? ইউরোপা হলো বৃহস্পতির গ্যালিলিয়ান চাঁদগুলোর মাঝে সবচাইতে ছোট এবং সবচাইতে মসৃণ। এর ব্যাস ১,৯৪০ মাইল, অর্থাৎ তা পৃথিবীর মোটামুটি এক চতুর্থাংশ আকৃতির এবং তৈরি বরফ ও পাথরে।
১৯৯০ সালে গ্যালিলিও মহাকাশযান আবিষ্কার করে এর পৃষ্ঠের নিচে থাকতে পারে গভীর পানির সাগর। এই পানি সম্পূর্ণভাবে বরফ হয়ে যায় না। কারণ প্রতি ৩.৫ দিনে বৃহস্পতিকে প্রদক্ষিণ করতে গিয়ে এখানে তৈরি হয় শক্তিশালী ঢেউ এবং এর আঘাতে বরফ ভেঙ্গে তরল পানি হয়ে থাকে।
শুধু তাই নয়, এই উপগ্রহের ভেতরে থাকা সিলিকেট ম্যান্টল এবং পৃষ্ঠের বরফের সাথে সরাসরি সংযুক্ত এই সাগর। এতে ইউরোপায় প্রাণের উপযোগী পরিবেশের তিনটি শর্তই পূরণ হয়ে যায়- তরল পানি, শক্তির উৎস এবং খনিজের উৎস। এ থেকে ধারণা করা যায় ইউরোপায় প্রাণ থাকতেও পারে।
ইউরোপা অনুসন্ধানে প্রথমেই একে প্রদক্ষিণ করে এর ব্যাপারে তথ্য সংগ্রহ করতে হবে, এরপর আসবে এর পৃষ্ঠের বরফ ভেদ করে ভেতরে অনুসন্ধানের পালা। এর ফাটা-ফাটা পৃষ্ঠ ভুতাত্বিক দিক দিয়ে এখনো বেশ তরুণ।
২০১২ সালে হাবলের চোখে দেখা যায়, বিশাল উত্তপ্ত পানির ফোয়ারা বের হয়ে আসছে এই পৃষ্ঠ ভেদ করে। এসব ফোয়ারা থেকে পানি সংগ্রহ করতে পারলে হয়তো ভেতরের সাগরের ব্যাপারে সহজে তথ্য পাওয়া যাবে।
ভবিষ্যতে ইউরোপায় অবতরণের জন্য মহাকাশযান পাঠানোর সম্ভাবনাও রয়েছে।